বয়স ৬৯ (৭০ নয় অনেকেই বলছেন ৭০) কিন্তু আপনার সামনে দিয়ে হেঁটে গেলে আপনার হার্টবিট বাড়তে বাধ্য়, সে আপনি পুরুষ হন কি নারী! সম্প্রতি তিনি এসেছিলেন কলকাতায় নিজের বায়োগ্রাফি লঞ্চ অনুষ্ঠানে। কখনো নস্টালজিক, কখনো ঠোঁটের কনায় সেই লক্ষ মানুষকে ঘায়েল করা হাসি, কখনো বা নিখাদ হাস্যরসে ভুলিয়ে দিলেন যে সেদিন তাঁর ফ্লাইট এক ঘণ্টার ওপর দেরিতে ছিল যার দরুন পাঁচতারা হোটেলের ব্যাঙ্কোয়েটে অপেক্ষারত সবার চা-কফি নিয়ে উৎকণ্ঠার পায়চারীর কষ্ট…নিয়ে গেলেন সেই স্বপ্নের দুনিয়ায়..এই না হলে “ড্রিম গার্ল”! লেখক, সাংবাদিক রাম কমল মুখার্জি’র চওড়া হাসি জানান দিচ্ছিল ঘরের ছেলে সত্যি ‘ড্রিম গার্ল’র মনই জয় করে নিয়েছেন তা নয়, গর্বিত করেছেন গোটা বাংলাকে এই অসামান্য “বিয়্যন্ড দি ড্রিম গার্ল” বইটি লিখে। সেই জন্য অনুষ্ঠানে সামিল হয়েছিল একঝাঁক টলি সেলেবরা (নিচে ছবিতে) আর সাক্ষী থাকলো এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের। সারাদিনের কর্মব্যস্ত শিডিউল সেরে আমাদের সাথে ধরা দিলেন একান্ত সাক্ষাৎকারে…
আপনি যখনই কলকাতায় আসেন কোন জিনিসটা না দেখে বা অনুভব না করে ফিরে যেতে আপনার মন চায় না?
হেমা’জি- কলকাতায় যখনই আসি ঐ পুরনো দিনের কথা, স্মৃতিগুলো মনে পড়ে যায়, যখন আমার ভাই আসতো দেখা করতে, ও তখন এসবিআই ব্যাঙ্কে কাজ করত আর সুযোগ পেলেই আমার সাথে দেখা করতে সেটে চলে আসতো বাবাকে সঙ্গে নিয়ে! একবার বাবার কাছে জেদ করেছিলাম আলিপুর চিড়িয়াখানা দেখব কারণ আমার সাদা বাঘ দেখার খুব ইচ্ছে ছিল, ওর নাম ছিল হিমাদ্রি! (একটু চুপ থেকে) এখনো মনে আছে আমার…
একটা সুন্দর উক্তি আছে, “প্রত্যেক মানুষেরই গল্প আছে, নিজের দায়িত্ব সেটাকে বেস্টসেলার বানানো” কিন্তু কয়েকজনই লেজেন্ড থাকেন যাঁদের গল্প পারে লক্ষাধিক মানুষের অনুপ্রেরণা হতে! আপনার কি মনে হয় এই বই বেস্টসেলার হওয়ার কারণ কি?
হেমা’জি- বেস্টসেলার কিনা বলতে পারবো না (হাসি) ওটা তো হার্পার কলিন্সের শান্তনু বলতে পারবে.. রাম কমল অনেক নিষ্ঠার সাথে বইটা লিখেছে, আমিও চাই সবাই এই বইটা পড়ুক, এর থেকে বেশী কিছু আমার চাওয়ার নেই। বেস্ট সেলার তো মিডিয়া বানায়, আপনি লিখুন আর মানুষকে বলুন তবে তো বইটা ঘরে ঘরে পৌঁছবে (হাসি)!
রাম’দা যখন আপনাকে প্রথম বইটার ব্যাপারে বলে কোন জিনিসটা আপনাকে উৎসাহ দেয় সবথেকে বেশী….যে বইটা লেখার দরকার আছে..
হেমা’জি- বিয়্যন্ড মাই বলিউড জার্নি। রাম কমলের একটা বই লেখার কথা ছিল আর আমার মনে হয়েছিল আমি তো অনেকদিন অ্যাক্টিভ সিনেমাতে নেই, মানুষ কি আর চাইবে পড়তে? তখন রাম কমল বলল যে এই বইটা হবে বিয়্যন্ড দি ড্রিম গার্ল। এটাই আমার পুরো অ্যাটেনশেনটা নিয়ে নেয়!
একজন খ্যাতনামা বলিউড পরিচালক বইটা পড়ে বলেছেন, এটা শুধু একটা বই নয় একটা পারফেক্ট স্ক্রিন প্লে। যদি ভবিষ্যতে এই বই নিয়ে সিনেমা হয়, এই মুহূর্তে কোন অভিনেত্রীর শক্ত কাঁধ কি দেখতে পেয়েছেন যে এই হেভিওয়েট ট্যাগটা বয়ে নিতে পারবে?
হেমা’জি- আমি চাই না আমাকে নিয়ে কেউ বায়োপিক বানাক! অনেক গুণী, বিখ্যাত মানুষ রয়েছেন যাঁদের গল্প থেকে অনেক ইন্টারেস্টিং সিনেমা হতে পারে!
এই শহরের এমন একটা জিনিস যেটা কোনদিন আপনি ভুলতে পারবেন না!
হেমা’জি- মা দক্ষিণেশ্বর কালী ও বেলুড় মঠ…যখনই যাই খুব শান্তি পাই ওখানে.. আমি অনেকবার এই দুটো জায়গায় গেছি, গঙ্গার ধারে গেলে একটা আলাদাই অনুভুতি হয় আর হ্যাঁ ঐ গুড়ের মিষ্টি সন্দেশ ভুলি কি করে (হাসি)!
আপনার দেখা বাংলার সেরা অভিনেতা, অভিনেত্রী?
হেমা’জি- আমি বাংলা সিনেমা খুব কমই দেখেছি, আমার ভালো লেগেছিল ঐশ্বর্যা রাইকে ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘চোখের বালি’তে যেটা বম্বেতে বসে দেখেছিলাম। আমরা একটা বাংলা সিনেমা করেছিলাম যখন এনএফডিসি’র চেয়ারপার্সেন ছিলাম, নাম ‘হেমন্তের পাখি’, খুব মিষ্টি একটা সিনেমা হয়েছিল। আমি চিনি ঋতুপর্না’কে, ও বাংলার খুব বড় স্টার এবং অবশ্যই প্রসেনজিৎ’কে, ও তো খুব বিখ্যাত এবং ওঁর বাবাকে চিনি খুব ভালো করে..
এই সময়ে আপনার দেখা সবথেকে হাইপড সিনেমা?
হেমা’জি- হাইপ না হলে সিনেমাহলে তো লোক আসবে না আজকের দিনে। এখন এটা বাধ্যতামূলক হয়ে গেছে যেকোন জিনিস নিয়েই হাইপ করা সে আপনি যাই করুন না কেন!
র্যাপিড ফায়ার
রাম কমল মুখার্জি না ভাবনা সৌম্যিয়া ?
হেমা’জি- ভাবনা একজন সিনিয়ার জার্নালিস্ট এবং মিষ্টি স্বভাবের একজন মানুষ, ও যে বইটা লিখেছিল সেটাতে ছিল সম্পূর্ণ আমার পয়েন্ট অফ ভিউ , কিন্তু এই বইতে আছে রাম কমলের চিন্তা ভাবনা আমাকে নিয়ে তার জন্য ও আমার কলিগ, ফ্যামিলি মেম্বার সহ অনেক মানুষের সাথে কথা বলেছে যার জন্য বইটা বেশ ইন্টারেস্টিং! দুটোই আলাদা এবং দুটোই খুব ভালো।
এই শব্দগুলো শুনলে প্রথম কোন কথাটা আপনার মনে আসে?
হেমা’জি-
আইটেম ডান্স- টাইমপাস
গানে র্যাপ- আউট ডেটেড
নেপোটিজম (স্বজনপোষণ)- নো মোর আ করণ (জোহার) টপিক।
রিমেক- থিঙ্ক ফ্রেশ!
আমাদের ‘ড্রিম গার্ল’র এই মুহূর্তের স্বপ্ন কি?
হেমা’জি- একা একা ঘুরতে যাওয়া কারুর হেল্প না নিয়ে, আজ পর্যন্ত আমি এটা করি নি, মনে হচ্ছে খুব তাড়াতাড়ি আমি এটা করতে চলেছি……
প্রশ্নের ওপারে- শুভদীপ কাজলী (এডিটর)
লেন্সের ওপারে- ঈশানী রায় চৌধুরী।